বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় (Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman Maritime University)‘, সংক্ষেপে মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় বা বশেমুরমেবি (BSMRMU), বাংলাদেশের ৩৭তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এটি বাংলাদেশ নৌবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত একটি সমুদ্র বিষয়ক বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়। এটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় এখানে শুধুমাত্র সমুদ্র বিষয়ক বিষয়গুলো নিয়ে পড়ানো হয়। এটি বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়াও এটি বিশ্বের ১৩তম ও এশিয়ার ৩য় মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়।

বিষয়সূচি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় পরিচিতি

বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে ঢাকার মিরপুর ১২-তে (পল্লবী) অবস্থিত অস্থায়ী ক্যাম্পাসে। চট্রগ্রামের হামিদচরে কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষে প্রায় ১১৮৪ কোটি টাকা ব্যায়ে ১০৬.৬ একর জমির উপর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের আনুষ্ঠানিক নির্মাণ কাজ চলছে। এর বাইরেও গবেষণার জন্য সেন্ট মার্টিন দ্বীপে একটি বিশেষ ক্যাম্পাস নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের ভিডিও:

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন পড়ব?

সমুদ্র বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে পড়ার জন্য দেশের একমাত্র ডেডিকেটেড বিশ্ববিদ্যালয় হল এটি। ফলে তোমার স্বপ্ন যদি হয় সমুদ্র বিষয়ক কোথাও কাজ করা, তাহলে মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ই তোমার জন্য সেরা জায়গা। অন্যান্য অনেক জায়গায় সমুদ্র বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ থাকলেও সেখানে সকল বিভাগের সমন্বয় থাকার কারণে এখানের মত সমুদ্র বিষয়ে ফোকাসড একটি পড়াশোনার পরিবেশ পাবে না। এখানে এ বিষয়ক ল্যাব সুবিধাও অনেক ভালো পাওয়া যাবে। পাশাপাশি ফিল্ড ওয়ার্ক তথা বাস্তব পরিবেশে অনেক কাজ হাতেকলমে করার সুযোগ মিলবে এখানে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ও বিভাগ

প্রস্তাবিত ৭টি অনুষদের অধীনে ৩৮টি বিভাগ রয়েছে। সবগুলো এখনও কার্যক্রম চালু করে নি। স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের পর এগুলো কার্যকর হবে। অনুষদ ও বিভাগগুলো হল:

  1. ফ্যাকাল্টি অব আর্থ অ্যান্ড ওশান সায়েন্স (ধরিত্রী ও সমুদ্র বিজ্ঞান অনুষদ)

    1. ওশানোগ্রাফি অ্যান্ড হাইড্রোগ্রাফি (সমুদ্রবিজ্ঞান ও জলবিজ্ঞান)
    2. মেরিন ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার (সামুদ্রিক মাৎস্যবিজ্ঞান ও জলজচাষ)
    3. জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি
    4. মেরিন বায়োলজি*
    5. মাইনিং*
    6. এনভায়রনমেন্ট স্টাডিজ*
  2. ফ্যাকাল্টি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ)

    1. নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড অফশোর ইঞ্জিনিয়ারিং
    2. মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং
    3. ওশান ইঞ্জিনিয়ারিং*
    4. ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং*
    5. টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং*
    6. হার্বার অ্যান্ড রিভার ইঞ্জিনিয়ারিং*
    7. কন্ট্রোল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স*
  3. ফ্যাকাল্টি অব মেরিন গভরনেন্স অ্যান্ড পলিসি (সামুদ্রিক শাসন ও নীতি)

    1. মেরিটাইম ল অ্যান্ড পলিসি (সমুদ্রবিষয়ক আইন ও নীতি)
    2. মেরিটাইম সিকিউরিটি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডি
    3. মেরিটাইম সেফটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন*
  4. ফ্যাকাল্টি অব শিপিং অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জাহাজ প্রশাসন অনুষদ)

    1. পোর্ট অ্যান্ড শিপিং ম্যানেজমেন্ট (বন্দর ও জাহাজ ব্যবস্থাপনা)
    2. ট্রান্সপোর্টেশন অ্যান্ড লজিস্টিকস ম্যানেজমেন্ট (পরিবহন ও সরবারহ ব্যবস্থাপনা)*
    3. মেরিটাইম সায়েন্স (সমুদ্রবিষয়ক বিজ্ঞান)
  5. ফ্যাকাল্টি অব কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইনফরম্যাটিক্স (কম্পিউটার বিজ্ঞান ও তথ্যবিদ্যা অনুষদ)*

    1. কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি*
    2. সফটওয়্যার অ্যান্ড নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিং*
    3. ইনফরমেশন সিস্টেম সিকিউরিটি*
  6. ফ্যাকাল্টি অব মেরিটাইম বিজনেস স্টাডিজ (মেরিটাইম ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ)

    1. অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম
    2. ম্যানেজমেন্ট
    3. ফিন্যান্স*
    4. মার্কেটিং*
    5. ইকোনমিক্স*
    6. মেরিটাইম ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট
  7. ফ্যাকাল্টি অব জেনারেল স্টাডিজ (সাধারণ শিক্ষা অনুষদ)

    1. বাংলা
    2. ইংলিশ (ইংরেজি)
    3. ম্যাথম্যাটিকস (গণিত)
    4. ফিজিক্স (পদার্থবিজ্ঞান)
    5. কেমিস্ট্রি (রসায়ন)
    6. বায়োকেমিস্ট্রি (প্রাণরসায়ন)
    7. সোশ্যাল সায়েন্স অ্যান্ড এনথ্রোপলজি (সামাজিক বিজ্ঞান ও নৃতত্ত্ব)*
    8. ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স (বস্তুগত বিজ্ঞান)*
    9. ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক)*
    10. হিস্ট্রি (ইতিহাস)*
    11. ল্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট (ভূমি প্রশাসন ও পানি ব্যবস্থাপনা)*

“*” মার্ক করা অনুষদ ও বিভাগ এখনও চালু হয় নি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিটিউট

বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ৪টি ইনস্টিটিটিউট আছে। সেগুলো হল:

  1. ইনস্টিটিটিউট অব বেঙ্গল অ্যান্ড বাংলাদেশ স্টাডিজ (বাংলা ও বাংলাদেশ শিক্ষা ইনস্টিটিটিউট)
  2. ইনস্টিটিটিউট অব প্রফেশনাল ল্যাঙ্গুয়েজ (পেশাদার ভাষা ইনস্টিটিটিউট)
  3. ইনস্টিটিটিউট অব রিনিউয়েবল অ্যানার্জি অ্যান্ড মেরিন রিসোর্সেজ (নবায়নযোগ্য জ্বালানি ইনস্টিটিটিউট ও সামুদ্রিক সম্পদ ইনস্টিটিটিউট)
  4. ইনস্টিটিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট (দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিটিউট)

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান অ্যাকাডেমিক প্রোগ্রাম

স্নাতক (সম্মান) প্রোগ্রাম

  1. ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন মেরিন ফিশারিজ
  2. ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন ওশানোগ্রাফি
  3. ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড অফশোর ইঞ্জিনিয়ারিং
  4. ব্যাচেলর অব লজ ইন মেরিটাইম ল
  5. ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ইন পোর্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড লজিস্টিকস

স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম

  1. মাস্টার ইন মেরিন বায়োটেকনোলজি
  2. মাস্টার ইন মেরিটাইম সায়েন্স
  3. মাস্টার অব লজ ইন মেরিটাইম ল
  4. মাস্টার ইন ওশানোগ্রাফি
  5. মাস্টার অব সায়েন্স ইন কোস্টাল অ্যান্ড রিভার ইঞ্জিনিয়ারিং
  6. মাস্টার ইন পোর্ট অ্যান্ড শিপিং ম্যানেজমেন্ট
  7. মাস্টার অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ইন মেরিটাইম বিজনেস
  8. মাস্টার অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ইন মেরিটাইম ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট
  9. মাস্টার ইন মেরিটাইম ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব সুবিধা

মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় নতুন হলেও এখানের গবেষণাগার তথা ল্যাব সুবিধা বেশ ভালো। অবশ্যই এমন না যে পর্যাপ্ত। তবে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ভালো ল্যাব সুবিধাই আছে। পাশাপাশি প্রতিবছরই ল্যাবের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে ল্যাবের যন্ত্রপাতি। আশা করা যায়, কয়েক বছরের মধ্যেই ল্যাবের দিক থেকে পর্যাপ্ত অবস্থায় যাবে।

স্নাতকোত্তর গবেষণা ব্যবস্থাপনা ও প্রযুক্তি স্থানান্তর কেন্দ্র, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়

এমফিল ও পিএইচডি পর্যায়ে গবেষণার জন্য এই গবেষণা কেন্দ্রটি তৈরি করা হয়েছে। আপাতত এই একটি কেন্দ্রের মাধ্যমেই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর পর্যায়ের গবেষণা এবং এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রাম পরিচালিত হচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সুবিধা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাথীদের থাকার জন্য বর্তমানে ২টি আবাসিক হল রয়েছে। সেগুলো হল:

  1. মেইল উইং
  2. ফিমেইল উইং

হল দুইটি মিরপুর ডিওএইচএসে অবস্থিত। হলের থাকার ও পড়াশোনার পরিবেশ বেশ সুন্দর।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সুবিধা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষক সম্পর্ক

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী আর শিক্ষক এর মধ্যে অনেক ভালো সম্পর্ক থাকে। এখানের শিক্ষকরা খুবই বন্ধুসুলভ আচরণ করেন। শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত কম থাকায়, এখানে শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের ভালোভাবে কেয়ার নিতে পারেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি চমৎকার গ্রন্থাগার আছে। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে সকল শিক্ষার্থীর জন্য পর্যাপ্ত বই আছে। এখানে বইয়ের পাশাপাশি দৈনিক সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন ও অন্যান্য জার্নাল আছে। পাশাপাশি অনুষদ ও ইনস্টিটিউট ভিত্তিক আলাদা আলাদা গ্রন্থাগার আছে। এর বাইরেও বঙ্গবন্ধু কর্নার ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নারেও আরো দুইটি গ্রন্থাগার রয়েছে।

গ্রন্থাগারগুলো অনেক সুন্দর করে সাজানো এবং পড়াশোনার জন্য চমৎকার পরিবেশ রয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন ব্যবস্থা

অনাবাসিক ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ৪টি বাস ও ২টি কোস্টারে পরিবহনের ব্যবস্থা রয়েছে। যা ঢাকার বিভিন্ন রুটে সপ্তাহে ৫ দিন চলাচল করে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অনুপাত খুবই উচ্চ মানের। প্রতি ১০-১৪ শিক্ষার্থীর জন্য ১ জন করে শিক্ষক রয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২টি ক্যাফেটেরিয়া বিদ্যমান। ক্যাফেটেরিয়া দু’টি অত্যন্ত পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন ও মনোরম পরিবেশে রাখা হয়। ক্যাফেটেরিয়ায় সুলভ মূল্যে খাবার পাওয়া যায়। ক্যাফেটেরিয়ায় টেলিভিশনের সুবিধা রয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট বিহীন শিক্ষা জীবন

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে সেশনজট খুবই সাধারণ বিষয়, সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজটের কোন সমস্যাই কখনো হয় নি। ফলে সহজেই ৪ বছরে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে বের হওয়া যাবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তন

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছোট আকারের মিলনায়তন আছে। এটি মেঘনা ভবনে অবস্থিত। যদিও মিলনায়তনটি আকারে ছোট, তবুও শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিবেচনায় পর্যাপ্ত।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান বলে এর নীতি-নির্ধারণের জন্য রয়েছে একটি সিনেট ব্যবস্থা। অস্থায়ী ক্যাম্পাস হওয়ায়, এখনও এর জন্য আলাদা ভবন নেই। তবে মূল ক্যাম্পাসে একটি দৃষ্টিনন্দন সিনেট ভবনের পরিকল্পনা আছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলাধুলা ও বিনোদন

অস্থায়ী ক্যাম্পাস হওয়ায় মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলাধুলা করার জন্য কোন কেন্দ্রীয় মাঠ নেই। তবে ইনডোর গেমসের জন্য তিনটি কমন রুমে অনেক প্রকারের খেলাধুলা ও বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে। টেবিল টেনিস, ক্যারম, দাবাসহ বিভিন্ন প্রকার ইনডোর গেমসের ব্যবস্থা রয়েছে।

তবে নিজস্ব মাঠ না থাকলেও, বিভিন্ন খেলাধুলা ও প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। যেমন: ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন ইত্যাদি। এর বাইরে, বিনোদনের জন্য রয়েছে সাংস্কৃতিক ক্লাব। সকল কমনরুম ও ক্যান্টিনে রয়েছে টেলিভিশনের ব্যবস্থা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার

মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিজস্ব মেডিকেল সেন্টার রয়েছে। সেখানে একজন ডাক্তার ও তিনজন অফিসার বিভিন্ন প্রকার স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে থাকেন। পাশাপাশি সমস্যা অনুযায়ী রোগীকে ঔষধও দেয়া হয়। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব একটি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে জরুরি সেবার জন্য।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা মান

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় একদমই নতুন হওয়ায় এখনো শিক্ষা ও গবেষণায় খুব বড় কোন অগ্রগতি করতে পারে নি। উপরন্তু অস্থায়ী ক্যাম্পাস একটি বড় বাধা গবেষণামূলক কার্যক্রমে। তদুপরি, শিক্ষকগণ গবেষণার ক্ষেত্রে বেশ সক্রিয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস লাইফ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস লাইফ অত্যধিক জাকজমকপূর্ণ না হলেও, বেশ ভালো। সারাবছরই নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন হয় ক্যাম্পাসে। পহেলা বৈশাখ, মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, ৭ই মার্চ-সহ বিভিন্ন জাতীয় দিবস আনুষ্ঠানিকতার সাথে পালন করা হয়।

এছাড়াও বার্ষিক ভ্রমন, আন্তঃবিভাগ প্রতিযোগিতা, আন্তঃহল প্রতিযোগিতাসহ অনেক খেলার আয়োজন করে। পাশাপাশি বিভিন্ন ক্লাব ও সংগঠনের নিজস্ব নানান অনুষ্ঠান, প্রতিযোগিতা তো থাকেই!

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাবসমূহ

নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও এখানে বেশ কিছু ক্লাব, সোসাইটি ও সংগঠন রয়েছে। সেগুলো হল:

  1. সাংস্কৃতিক ক্লাব
  2. বিজ্ঞান ক্লাব
  3. ফটোগ্রাফিক সোসাইটি
  4. হাইকিং ক্লাব
  5. ব্যবসা ও ক্যারিয়ার ক্লাব
  6. গবেষণা সোসাইটি
  7. স্পোর্টস ক্লাব
  8. বিতর্ক ও ভাষা ক্লাব
  9. দাবা ক্লাব
  10. মেরিন ফিশারিজ দাবা কমিউনিটি
  11. উচ্চ শিক্ষা ক্লাব
  12. ইয়থম্যাপার্স অ্যাট বশেমুরমেবি
  13. বিবিলোম্যানিয়াক কমিউনিটি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতিস্তম্ভ

মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইটি কর্নার রয়েছে দেশের ইতিহাস ও বন্ধবন্ধুর স্মৃতির উদ্দেশ্যে। সেগুলো হল:

  1. বঙ্গবন্ধু কর্ণার

    বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির উদ্দেশ্যে এই কর্ণারটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই কর্ণারে বসার জায়গা ও একটি ছোট গ্রন্থাগারে বেশ কিছু বই রয়েছে। এখানে বঙ্গবন্ধুর লেখা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বইগুলো স্থান পেয়েছে। এই কর্ণারটি মেঘনা ভবনে অবস্থিত।

  2. মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার

    ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে এই কর্ণারটি তৈরি করা হয়েছে। এই কর্ণারে বসার জায়গা ও একটি ছোট গ্রন্থাগারে বেশ কিছু বই রয়েছে। এখানে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বইগুলো স্থান পেয়েছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে এই কর্ণারটি তৈরি করা হয়েছে। এই কর্ণারটি পদ্মা ভবনে অবস্থিত।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পদ্ধতি ও প্রস্তুতি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেশ খানিকটা ভিন্ন হয়ে থাকে। আসন সংখ্যা কম থাকায় এখানে আসনপ্রতি প্রচুর প্রতিযোগী থাকে। এটি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয় নি। তাই স্বতন্ত্রভাবে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে থাকে। মোট চারটি অনুষদে স্নাতক পর্যায়ে পরীক্ষা হয়। পরীক্ষায় সাধারণত ৬০ নম্বরের বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও ৪০ নম্বরের লিখিত প্রশ্ন থাকে। এর বাইরে মাধ্যমিক (এসএসসি) ও উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষার ফলাফলের (জিপিএ) উপর ১০০ নম্বর থাকে। মোট ২০০ নম্বরের ভিত্তিতে মেধাতালিকা প্রস্তুত করা হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে বিস্তারিত জানতে এই লিঙ্কে ক্লিক করো

শেষ কথা

যদি সমুদ্র বিষয়ক পড়াশোনায় তোমার আগ্রহ থাকে, তাহলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় তোমার জন্য হতে পারে সেরা সুযোগ। নীল অর্থনীতিতে অগ্রগতি এনে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখতে পারো তুমি নিজেও! মেরিটাইম পরিবারে যুক্ত হয়ে গ্রহণ করতে পারো ব্লু আইডেন্টিটি!

মুহাম্মাদ আশরাফুল আলম শিমুল

বিএস ইন মেরিন ফিশারিজ (১ম ব্যাচ, ২০১৯-২০)
মেরিন ফিশারিজ ও অ্যাকুয়াকালচার ডিপার্টমেন্ট
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ